Bengali Quran | কুরআন পড়ুন

Chapter 26 (Sura 26)
1; ত্বা, সীন, মীম।
2; এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
3; তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্নঘাতী হবেন।
4; আমি যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন নাযিল করতে পারি। অতঃপর তারা এর সামনে নত হয়ে যাবে।
5; যখনই তাদের কাছে রহমান এর কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
6; অতএব তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং যে বিষয় নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তার যথার্থ স্বরূপ শীঘ্রই তাদের কাছে পৌছবে।
7; তারা কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।
8; নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
9; আপনার পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।
10; যখন আপনার পালনকর্তা মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ সম্প্রদায়ের নিকট যাও;
11; ফেরাউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করে না?
12; সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে দেবে।
13; এবং আমার মন হতবল হয়ে পড়ে এবং আমার জিহবা অচল হয়ে যায়। সুতরাং হারুনের কাছে বার্তা প্রেরণ করুন।
14; আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আছে। অতএব আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।
15; আল্লাহ বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের সাথে থেকে শোনব।
16; অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।
17; যাতে তুমি বনী-ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।
18; ফেরাউন বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায় আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? এবং তুমি আমাদের মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।
19; তুমি সেই-তোমরা অপরাধ যা করবার করেছ। তুমি হলে কৃতঘ্ন।
20; মূসা বলল, আমি সে অপরাধ তখন করেছি, যখন আমি ভ্রান্ত ছিলাম।
21; অতঃপর আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন করলাম। এরপর আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং আমাকে পয়গম্বর করেছেন।
22; আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে গোলাম বানিয়ে রেখেছ।
23; ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কি?
24; মূসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
25; ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, তোমরা কি শুনছ না?
26; মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।
27; ফেরাউন বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রসূলটি নিশ্চয়ই বদ্ধ পাগল।
28; মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।
29; ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।
30; মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?
31; ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।
32; অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।
33; আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো।
34; ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।
35; সে তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়। অতএব তোমাদের মত কি?
36; তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।
37; তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।
38; অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।
39; এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।
40; যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি-যদি তারাই বিজয়ী হয়।
41; যখন যাদুকররা আগমণ করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?
42; ফেরাউন বলল, হঁ্যা এবং তখন তোমরা আমার নৈকট্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
43; মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ কর তোমরা যা নিক্ষেপ করবে।
44; অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী হব।
45; অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।
46; তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।
47; তারা বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
48; যিনি মূসা ও হারুনের রব।
49; ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।
50; তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
51; আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।
52; আমি মূসাকে আদেশ করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও, নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।
53; অতঃপর ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে প্রেরণ করল,
54; নিশ্চয় এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।
55; এবং তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।
56; এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।
57; অতঃপর আমি ফেরআউনের দলকে তাদের বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিষ্কার করলাম।
58; এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
59; এরূপই হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে করে দিলাম এসবের মালিক।
60; অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।
61; যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।
62; মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।
63; অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।
64; আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম।
65; এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম।
66; অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।
67; নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না।
68; আপনার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
69; আর তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে দিন।
70; যখন তাঁর পিতাকে এবং তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কিসের এবাদত কর?
71; তারা বলল, আমরা প্রতিমার পূজা করি এবং সারাদিন এদেরকেই নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে থাকি।
72; ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা শোনে কি?
73; অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে?
74; তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।
75; ইব্রাহীম বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, যাদের পূজা করে আসছ।
76; তোমরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা ?
77; বিশ্বপালনকর্তা ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।
78; যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,
79; যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন,
80; যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
81; যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।
82; আমি আশা করি তিনিই বিচারের দিনে আমার ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন।
83; হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর
84; এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর।
85; এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর।
86; এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্যতম।
87; এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না,
88; যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না;
89; কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে।
90; জান্নাত আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।
91; এবং বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম।
92; তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের পূজা করতে।
93; আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে, অথবা তারা প্রতিশোধ নিতে পারে?
94; অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে আধোমুখি করে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে।
95; এবং ইবলীস বাহিনীর সকলকে।
96; তারা তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ
97; আল্লাহর কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিলাম।
98; যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম।
99; আমাদেরকে দুষ্টকর্মীরাই গোমরাহ করেছিল।
100; অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।
101; এবং কোন সহৃদয় বন্ধু ও নেই।
102; হায়, যদি কোনরুপে আমরা পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পেতাম, তবে আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারী হয়ে যেতাম।
103; নিশ্চয়, এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
104; আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
105; নূহের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।
106; যখন তাদের ভ্রাতা নূহ তাদেরকে বললেন, তোমাদের কি ভয় নেই?
107; আমি তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।
108; অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
109; আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
110; অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
111; তারা বলল, আমরা কি তোমাকে মেনে নেব যখন তোমার অনুসরণ করছে ইতরজনেরা?
112; নূহ বললেন, তারা কি কাজ করছে, তা জানা আমার কি দরকার?
113; তাদের হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!
114; আমি মুমিনগণকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই।
115; আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
116; তারা বলল, হে নূহ যদি তুমি বিরত না হও, তবে তুমি নিশ্চিতই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।
117; নূহ বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় তো আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।
118; অতএব, আমার ও তাদের মধ্যে কোন ফয়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সংগী মুমিনগণকে রক্ষা করুন।
119; অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই করা নৌকায় রক্ষা করলাম।
120; এরপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জত করলাম।
121; নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
122; নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
123; আদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
124; তখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললেনঃ তোমাদের কি ভয় নেই?
125; আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রসূল।
126; অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
127; আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো পালনকর্তা দেবেন।
128; তোমরা কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন নির্মান করছ?
129; এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা চিরকাল থাকবে?
130; যখন তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত আঘাত হান।
131; অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
132; ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা জান।
133; তোমাদেরকে দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,
134; এবং উদ্যান ও ঝরণা।
135; আমি তোমাদের জন্যে মহাদিবসের শাস্তি আশংকা করি।
136; তারা বলল, তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশ নাই দাও, উভয়ই আমাদের জন্যে সমান।
137; এসব কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস বৈ নয়।
138; আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।
139; অতএব, তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং আমি তাদেরকে নিপাত করে দিলাম। এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
140; এবং আপনার পালনকর্তা, তিনি তো প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
141; সামুদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
142; যখন তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
143; আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
144; অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
145; আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
146; তোমাদেরকে কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?
147; উদ্যানসমূহের মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে ?
148; শস্যক্ষেত্রের মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে ?
149; তোমরা পাহাড় কেটে জাঁক জমকের গৃহ নির্মাণ করছ।
150; সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।
151; এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ মান্য কর না;
152; যারা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না;
153; তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ একজন।
154; তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে কোন নিদর্শন উপস্থিত কর।
155; সালেহ বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি পানের পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।
156; তোমরা একে কোন কষ্ট দিও না। তাহলে তোমাদেরকে মহাদিবসের আযাব পাকড়াও করবে।
157; তারা তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে গেল।
158; এরপর আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
159; আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
160; লূতের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
161; যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না ?
162; আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
163; অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
164; আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।
165; সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?
166; এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
167; তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে।
168; লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
169; হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর।
170; অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলাম।
171; এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
172; এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
173; তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত দের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট।
174; নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
175; নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
176; বনের অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
177; যখন শো’আয়ব তাদের কে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?
178; আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
179; অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
180; আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।
181; মাপ পূর্ণ কর এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
182; সোজা দাঁড়ি-পাল্লায় ওজন কর।
183; মানুষকে তাদের বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে ফিরো না।
184; ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী লোক-সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করেছেন।
185; তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম।
186; তুমি আমাদের মত মানুষ বৈ তো নও। আমাদের ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
187; অতএব, যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও।
188; শো’আয়ব বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আমার পালনকর্তা ভালরূপে অবহিত।
189; অতঃপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয় সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।
190; নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।
191; নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
192; এই কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ।
193; বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।
194; আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন,
195; সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।
196; নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
197; তাদের জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের আলেমগণ এটা অবগত আছে?
198; যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,
199; অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
200; এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
201; তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ না করে মর্মন্তুদ আযাব।
202; অতঃপর তা আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে পড়বে, তারা তা বুঝতে ও পারবে না।
203; তখন তারা বলবে, আমরা কি অবকাশ পাব না?
204; তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?
205; আপনি ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ-বিলাস করতে দেই,
206; অতঃপর যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হত, তা তাদের কাছে এসে পড়ে।
207; তখন তাদের ভোগ বিলাস তা তাদের কি কোন উপকারে আসবে?
208; আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
209; স্মরণ করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ নয়।
210; এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি।
211; তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তারা এর সামর্থøও রাখে না।
212; তাদেরকে তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা রয়েছে।
213; অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।
214; আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
215; এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।
216; যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।
217; আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,
218; যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,
219; এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।
220; নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
221; আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?
222; তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর।
223; তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
224; বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।
225; তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?
226; এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
227; তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।

Pages ( 26 of 114 ): « Previous1 ... 2425 26 2728 ... 114Next »